কোরআন তেলাওয়াত এর ফজিলত - কোরআন মাজীদ তেলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত

আপনারা কি কোরআন তেলাওয়াত এর ফজিলত বা কুরআন তেলাওয়াতের ফজিলত আল কাউসার এবং কোরআন মাজীদ তেলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আমাদের আজকের এই পোস্টটি আপনাদের জন্য। কোরআন মাজীদ তেলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে অনেক। তেমনি কোরআন তেলাওয়াত না করার শাস্তি ও রয়েছে। 
আজকে আমরা আলোচনা করব নামাজে কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত pdf  বা কোরআন তেলাওয়াত এর ফজিলত সম্পর্কে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেই, কুরআনের ফজিলত সম্পর্কে আয়াত, কোরআন তেলাওয়াত এর ফজিলত এবং কোরআন মাজীদ তেলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে।

সূচিপত্রঃ কোরআন তেলাওয়াত এর ফজিলত - কোরআন মাজীদ তেলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত

কোরআন তেলাওয়াত এর ফজিলত| কুরআন তেলাওয়াতের ফজিলত আল কাউসার

আমরা এখন কোরআন তেলাওয়াত এর ফজিলত বা কুরআন তেলাওয়াতের ফজিলত আল কাউসার সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। প্রত্যেক নবী ও রাসুলকে মানবজাতির হিদায়াতের জন্য আল্লাহ তাআলা কিতাব দান করেছেন। সে ধারায় আল-কোরআন দান করেছেন সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে। মানবজাতির জন্য পবিত্র আল-কোরআন হচ্ছে একটা পূর্ণাঙ্গ সংবিধান।

আল কোরআন এমন একটা ঐশী কিতাব যার ভাব, ভাষা, সুর ঝংকার, মর্মস্পর্শী, বাক্যের অনুপম বিন্যাস, অভিনব গ্রন্থনা, ভাবের গভীরতা, মূর্ছনা, ছন্দ, উপমা, অলংকার, শাব্দিক দ্যোতনা ইদ্রিস গুণাবলী সবকিছু মিলিয়ে যেন তার তুলনা করা যায় না। মোটকথা এর স্টাইল সম্পূর্ণটাই আল্লাহর দ্বারা প্রদত্ত। এই কোরআন তেলাওয়াতের ফজিলত বা কোরআন মাজীদ তেলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত অপরিসীম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, একটা ব্যক্তি সূরা আল কাহফ তেলাওয়াত করছিলেন, আর একটা ঘোড়া তার পাশে দুটো রশি দিয়ে বাধা অবস্থায় ছিল।

আরো পড়ুনঃ রোজা রাখলে কি ওজন কমে যায়

তেলাওয়াত করার সময় ঘোড়া টাকে একটা বাদলের মতো ছায়া এসে ঢেকে দিলেন, আর এই বাদলটা আস্তে আস্তে ঘোরার নিকটবর্তী হতে লাগলো। তা দেখে ঘোড়াটি লাফালাফি করতে লাগলো। তারপর সকালবেলায় সেই ব্যক্তিটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে এই ঘটনা খুলে বললেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটা হল শান্তি পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের কারণে অবতরণ করা হয়েছিল। (বুখারী, হাদিসঃ ৫০১১) 

কোরআন মাজীদ তেলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত

কোরআনের প্রত্যেকটা আয়াতে বিশ্ব মানবতার হেদায়েত এবং মুক্তির বার্তা যেরকম রয়েছেন, তেমনি কোরআন মাজীদ তেলাওয়াতে বিশ্বাসীদের জন্য রয়েছে অফুরান সাওয়াব এবং পুরস্কারের ঘোষণা। কোরআন মাজীদ তেলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত নিয়ে বিশিষ্ট আলেম ড. মাওলানা মুস্তাক আহমদ এর শ্রুতি লিখন বয়ান করেছেন-মিজান বিন রমজান। আল্লাহর সাথে কথা বলার মাধ্যমে কুরআন তেলাওয়াত। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মতের সম্মানই বেশি আর শ্রম কম।

আরো পড়ুনঃ রমজানের করণীয় ও বর্জনীয়

আল্লাহ তাআলা এই উম্মতকে কালামুল্লাহ বা আল কুরআন দান করেছেন যা স্বয়ং আল্লাহ তায়ালার কথা। আল্লাহর সঙ্গে হযরত মূসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম কথা বলতেন কিন্তু সেটা ছিল একটা নির্ধারিত সময়ে। আর এই উম্মতের জন্য আল্লাহর সাথে যখন খুশি তখন কথা বলার সুযোগ রয়েছেন। হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেছেন, যখন আমার আল্লাহর সাথে কথা বলার মন চাইতো, তখন আমি কোরআন তেলাওয়াত করা শুরু করে দিতাম।

কুরআনের ফজিলত সম্পর্কে আয়াত| নামাজে কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত pdf

আল্লাহর কিতাব যারা পাঠ করে, নামাজ আদায় করে, আল্লাহর দেয়া রিজিক থেকে প্রকাশ্যে ও গোপনে ব্যয় করে থাকে, এমন ব্যবসার তারাই আশা করতে হলে যা ক্ষতিগ্রস্ত কখনো হবে না। কেননা তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিদান আল্লাহ তায়ালা দেবেন। তিনি দয়াবান এবং ক্ষমাশীল। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ সাঃ নামাজে কোরআন তেলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন। তা হচ্ছে-

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ বর্ণনা করেছেন, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কেউ কি তোমাদের পছন্দ করে যে, সে ফিরে এসে তার পরিবারের কাছে দেখবে-বড় বড় আকারের তার তিনটা নাদুস-নুদুস গর্ভবতী (অনেক মূল্যবান মরুভূমির জাহাজ খ্যাত) উষ্ট্রী রয়েছে? আমরা যখন বলেছিলাম হ্যাঁ আমরা এমনটা দেখতে চাই।

প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তাহলে কেউ যদি তোমাদের নামাজের মধ্যে তিনটা কুরআনের আয়াত পাঠ করে থাকে তাহলে সেটা হবে তার জন্য বড় আকারের তিনটা নাদুস-নুদুস গর্ভবতী উষ্ট্রীর চাইতেও উত্তম। (মুসলিম) হযরত তামিম দারি রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বর্ণনা করেছেন, আল্লাহর রাসূল সাঃ বলেন, এক রাকাআতে যে ব্যক্তি কুরআনের ১০০ আয়াত পাঠ করবে, আল্লাহর সামনে এক রাত বিনীত থাকার সমান সওয়াব যে ব্যক্তির আমলনামায় লেখা হবে। (মুসনাদে আহমদ)

নামাজের মধ্যে কুরআন তেলাওয়াত করলে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের খুব কার্যকরী আমল এটা। আল্লাহর দপ্তরে যে আমলের কারণে বিনয়ের মর্যাদা পায় বান্দা। সেজন্য প্রত্যেক মুসলমানের উচিত নামাজের মধ্যে বেশি বেশি করে কোরআন তেলাওয়াত করা। লম্বা এবং দীর্ঘ কেরাতে নামাজ পড়তে হবে। বিশেষ করে রাতে নফল নামাজ পড়ার সময় কুরআনুল কারীমের আয়াত বেশি বেশি তেলাওয়াত করা। এর বিনয়ে হাদিসে ঘোষিত ফজিলত পাবার চেষ্টা করে যাওয়া। সকল মুমিন মুসলিম উম্মাহকে নফল কিংবা ফরজ নামাজে আল্লাহ তায়ালা বেশি করে কুরআনের আয়াত তেলাওয়াত করার তৌফিক দিন।

কোরআন তেলাওয়াত না করার শাস্তি

কুরআন হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ জীবন বিধান, এবং মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ পথ প্রদর্শক। এটা এমন একটা অমূল্য সম্পদ যে এটা পড়লেও সাওয়াব পাওয়া যায়। আল্লাহর কিতাবের একটা হরফ যে ব্যাক্তি পড়বে সে একটা নেকি পেয়ে যাবে। আর প্রত্যেকটি নেকি হচ্ছে ১০ গুণের সমান। আমরা বলে থাকি যে, ' আলিফ লাম মিম' হচ্ছে একটা হরফ। কিন্তু না, আলিফ হচ্ছে একটা হরফ, লাম হচ্ছে একটা হরফ এবং মিম হচ্ছে একটা হরফ। (তিরমিজিঃ ২৯১০)। পবিত্র আল কোরআনে বলা হয়েছেন, ' আপনার প্রতি আমি এই বরকত পূর্ণ কিতাব নাযিল করেছি, এই আয়াতগুলো যেন তারা অনুধাবন করেন এবং জ্ঞানীরা উপদেশ গ্রহণ করে থাকে' (সূরা সোয়াদঃ ২৯)।

কুরআন নিয়ে তারা কি চিন্তা করে না? নাকি অন্তঃকরণ তাদের বন্ধ?' (সূরা মুহাম্মদঃ ০৪)। অন্য আয়াতে এসেছেন, আমি কোরআনকে সহজ করেছি উপদেশ গ্রহণ করার জন্য। অর্থাৎ চিন্তা করবে এমন কেউ কি আছে? (সূরা কামারঃ ১৭)। অতএব, উপরক্ত আয়াতসমিলের অর্থ এটা নয় যে, না বুঝিয়ে কোরআন পড়লে সাওয়াব পাবেনা। বরং কোরআন তেলাওয়াত না করার শাস্তি আছে। কোরআন না পড়লে কি হয় কিংবা কোরআন তেলাওয়াত না করার শাস্তির বিষয়ে তুলে ধরবো। কেননা, কোরআন তেলাওয়াত হচ্ছে একটা স্বতন্ত্র ইবাদত। কোরআন না বুঝে পড়লে কোন গুনাহ হবে না।

আরো পড়ুনঃ শবে বরাতের নামাজের নিয়ম

কিন্তু আপনি কুরআন না বুঝে তেলাওয়াত করলে সারা জীবন অনেক নেয়ামত থেকে বঞ্চিত হবেন। তবে যার মধ্যে কোরআনের কোন ধরনের অংশ নাই অর্থাৎ কোরআন সম্পর্কে যে ব্যক্তি অজ্ঞ কিংবা কোরআনের শুদ্ধ তেলাওয়াত শিখেনি, সেই ব্যক্তিকে অনবরত পতিত ঘরের সাথে তুলনা করা হয়েছে। অর্থাৎ কোরআন তেলাওয়াত না করার শাস্তি হচ্ছে অনবরত পতিতা ঘর। যে বিরান ঘরে কিংবা পতিত ভূমি কারো উপকারে কখনো আসে না বরং অন্যের ক্ষতি ও বিপদের কারণ হয়ে থাকে। বিশুদ্ধভাবে কুরআন তেলাওয়াত না করার ফলে সাওয়াবের পরিবর্তে আরো গুনাগার হয়ে থাকে

শেষ কথাঃ কোরআন তেলাওয়াত এর ফজিলত - কোরআন মাজীদ তেলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত

কোরআন তেলাওয়াত এর ফজিলত এবং কোরআন মাজীদ তেলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোষ্টটি ভালোভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। কোরআন তেলাওয়াত এর ফজিলত এবং কোরআন মাজীদ তেলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে সবার আগে জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন।

আজ আর নয়, কোরআন তেলাওয়াত এর ফজিলত এবং কোরআন মাজীদ তেলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই কোরআন তেলাওয়াত এর ফজিলত এবং কোরআন মাজীদ তেলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। ২৩৭৬৬

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url