সুইচ কি - সুইচ কি কাজে ব্যবহৃত হয়

সুইচ কি কাজে ব্যবহৃত হয় তা কি জানেন? আপনারা হয়তো সবাই কমবেশি সুইচের নাম শুনেছেন। কিন্তু সুইচ কি ও সুইচ কি কাজে ব্যবহৃত হয় তা যদি না জেনে থাকেন তবে এই পোস্টটি আপনার জন্য। এই পোস্টে সুইচ কি এবং সুইচ কি কাজে ব্যবহৃত হয় সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই সম্পূর্ণ পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
নেটওয়ার্ক তৈরির সময় আমরা অহরহ সুইচের ব্যবহার দেখতে পাই। আজ এই পোস্টে হাব ও সুইচ কি ধরনের ডিভাইস, সুইচ কি কাজে ব্যবহৃত হয়, সুইচ ও রাউটারের মধ্যে পার্থক্য, বৈদ্যুতিক সুইচ কি ও বৈদ্যুতিক সুইচের কাজ কি ইত্যাদি দরকারি বিষয়গুলো সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা প্রদান করব।

পোস্ট সূচিপত্র - সুইচ কি - সুইচ কি কাজে ব্যবহৃত হয় জেনে নিন 

নেটওয়ার্ক সুইচ কি 

কোনো নেটওয়ার্ক তৈরির ক্ষেত্রে সুইচ হলো এমন একটি ডিভাইস যা লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কের বিভিন্ন অংশের মধ্যে তথ্যের ভান্ডার আদান-প্রদান করতে সক্ষম। সুইচ যখন ডাটা সেন্ড করে তখন তা ফিল্টারিং এবং গুচ্ছভাবে ফরোয়ার্ডিং করতে পারে। সাধারণত, সুইচ OSI লেয়ারের অন্যতম ডাটা লিঙ্ক লেয়ারে কাজ করে। তবে মাঝেমধ্যে এটি নেটওয়ার্ক লেয়ারেও কাজ করে থাকে।
ছোট ছোট নেটওয়ার্ক তৈরিতে সুইচের বহুল ব্যবহার রয়েছে। সুইচ মূলত কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমে এক ধরণের নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটি ডিভাইস যা মিডিয়া সেগমেন্টগুলোকে একটি কেন্দ্রীয় অবস্থানে এনে একত্রিত করে থাকে। তাই সুইচ একটি নেটওয়ার্ক ডিভাইস এবং একে LAN ডিভাইস নামেও আখ্যা দেওয়া হয়। কারণ, ল্যান নেটওয়ার্ক তৈরির সময় সুইচ সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়। একটি সুইচে কতগুলো ডিভাইস কানেক্ট করা সম্ভব তা সুইচের পোর্ট সংখ্যার উপর নির্ভর করে।

নেটওয়ার্ক সুইচ কি কাজে ব্যবহৃত হয়

সুইচ তার পোর্টের সাথে সংযুক্ত ডিভাইসগুলো থেকে ডাটা সংগ্রহ করে তারপর তার উপযুক্ত গন্তব্যের ডিভাইসে সাথে সাথে ফরোয়ার্ড করে দেয়। এই ফরোয়ার্ড করার সময় উক্ত ডিভাইসের MAC Address (ডিভাইসের স্বকীয় ঠিকানা) এর সাথে মিলিয়ে তবেই পাঠানো হয়। ডিভাইস থেকে যখন তথ্যসমূহ পাঠানো হয় তখন তা কোন ডিভাইসের পোর্টের পাঠানো হবে, সেটি সুইচের সাথে সংযুক্ত MAC Table সারণী থেকে পরীক্ষা করা হয়। তারপর সেই MAC অ্যাড্রেসে প্রেরণ করা হয়। এতে করে তথ্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তা বজায় থাকে। এভাবেই নেটওয়ার্কে সুইচ কাজ করে থাকে। 

সুইচ ও রাউটারের মধ্যে পার্থক্য কি কি

নেটওয়ার্ক সুইচ কি এবং সুইচ কি কাজে ব্যবহৃত হয় তা আপনারা অলরেডি জেনে নিয়েছেন। এবার চলুন সুইচ ও রাউটারের মধ্যে পার্থক্য কি কি রয়েছে।
সাধারণত সুইচ একটি নেটওয়ার্ক এর আওতায় যতগুলো ডিভাইস আছে সে সকল ডিভাইসের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য ব্যবহৃত হয়, অপরদিকে রাউটার একাধিক নেটওয়ার্ক এর মধ্যে কানেকশন সৃষ্টির জন্য ব্যবহৃত হয়। বাসাবাড়িতে  নেটওয়ার্ক সংযোগ দেওয়ার জন্য একটি রাউটার দ্বারাই বাড়ির সকল প্রকার ডিভাইস কে ইন্টারনেট এর সাথে সংযুক্ত করা হয়।

অন্যদিকে সুইচ ব্যবহৃত হয় বড় প্রতিষ্ঠান, অফিস, কম্পিউটার সেন্টারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যেখানে অনেক কম্পিউটার কে সংযুক্ত করে একটি লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (LAN) গড়ে তোলার জন্য। সুইচ ও রাউটারের ভেতর আরও পার্থক্য রয়েছে। সুইচ নেটওয়ার্কে সংযুক্ত সকলের সাথেই একইভাবে কানেক্ট হয় কিন্তু রাউটার তার সবচেয়ে কাছাকাছি থাকা নেটওয়ার্কে প্রথম কানেক্টেড হয়। সুইচ এর সাথে সংযুক্ত প্রতিটি ডিভাইসের জন্য MAC Address নামক একটি ইউনিক অ্যাড্রেস সংযুক্ত আছে।

কোনো ডিভাইস যখন নেটওয়ার্ক এর সাথে সংযুক্ত অন্য একটি ডিভাইসে তথ্য প্রেরণ করতে চায়, তখন তা প্রথমে সুইচ এ যায়। তারপর সুইচ তথ্যটি কোন ডিভাইসে প্রেরণ করতে হবে তার ম্যাক এড্রেস সনাক্ত করে এবং কাঙ্ক্ষিত ডিভাইসে তথ্য পৌঁছে দেয়। রাউটারও সুইচ এর মত সঠিক ডিভাইসে তথ্য প্রেরণের পাশাপাশি তা যেন সবচেয়ে কম সময়ে এবং সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত পথে কাঙ্খিত ডিভাইসে পৌছায় তা নিশ্চিত করে।

বৈদ্যুতিক সুইচ কি | বৈদ্যুতিক সুইচের কাজ কি

অনেকে সুইচ কি জিজ্ঞেস করলে কনফিউশানে পরে যান যে এটি কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং সুইচ নাকি বৈদ্যুতিক। চলুন এবার জেনে নিই বৈদ্যুতিক সুইচ কি এবং বৈদ্যুতিক সুইচ কি কাজে ব্যবহৃত হয়। 
কোনো বৈদ্যুতিক বর্তনীতে তড়িৎ প্রবাহের পথকে চালু বা বন্ধ রাখার জন্য আবশ্যক যে ডিভাইস ব্যবহার করা হয় তাই হলো বৈদ্যুতিক সুইচ। সুইচকে নিয়ন্ত্রণকারী ডিভাইসও বলা হয়। বিভিন্ন রকমের বৈদ্যুতিক সুইচ রয়েছে। যেমন: ওয়ান ওয়ে সুইচ, টু ওয়ে সুইচ, পুশ পুল সুইচ ইত্যাদি। একটি আদর্শ বৈদ্যুতিক সার্কিটে ৫ টি উপাদান থাকা বাধ্যতামূলক, তার মধ্যে অন্যতম হলো বৈদ্যুতিক সুইচ। সুইচ ছাড়া কোনো সার্কিট কল্পনাই করা যায় না। তাই বৈদ্যুতিক সার্কিটে সুইচ একটি অপরিহার্য উপাদান। 

বৈদ্যুতিক সুইচের কাজ হলো বর্তনীতে সামগ্রিক তড়িৎ প্রবাহ কন্ট্রোল করা। বৈদ্যুতিক সুইচ সর্বদা লাইভ তার বা পজিটিভ তারের সাথে সংযুক্ত থাকে। সুইচে কানেকশন দেওয়ার সময় একটি তার বিদ্যুৎ সরবরাহ থেকে সরাসরি বৈদ্যুতিক যন্ত্রের সঙ্গে লাগানো থাকে এবং অপর একটি তারের মাঝখানে কেটে সুইচের দুটি তার, কাটা সেই তারের সঙ্গে ভালোভাবে যুক্ত করা থাকে। অতঃপর সুইচ কানেকশন পেলে তা অন/অফ করার মাধ্যমে বিদ্যুৎ প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

উপসংহার - সুইচ কি | সুইচ কি কাজে ব্যবহৃত হয় 

প্রিয় বন্ধুরা, আশা করি বিভিন্ন ধরনের সুইচ কি এবং সেই সুইচ কি কাজে ব্যবহৃত হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়ে গেছেন। আশা করা যায় আপনি এখন এসব ধারণা কাজে লাগিয়ে সঠিকভাবে সুইচ ব্যবহার করতে পারবেন। যারা সুইচ কি এবং সুইচ কি কাজে ব্যবহৃত হয় তা জানেনা তাদেরকে এই পোস্টটি শেয়ার করে জানার সুযোগ করে দিন। প্রযুক্তি বিষয়ক আরও খুঁটিনাটি টিপস পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। @23891

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url