পেটে ব্যাথার কারণ এপেন্ডিসাইটিস তা কিভাবে বুঝবেন

পেটে ব্যাথার কারণ এপেন্ডিসাইটিস তা কিভাবে বুঝবেন? এই বিষয় সম্পর্কে আপনাদের আজকে জানাবো। সকল পেটে ব্যাথার এপেন্ডিসাইটিস হয় না। তাই কোন ধরনের পেটে ব্যাথার কারণ এপেন্ডিসাইটিস তা কিভাবে বুঝবেন সে সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেল। আশা করি এখান থেকে আপনি পেটে ব্যাথার কারণ এপেন্ডিসাইটিস তা কিভাবে বুঝবেন? সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

আপনি যদি আপনার পেটে ব্যাথার কারণ এপেন্ডিসাইটিস তা কিভাবে বুঝবেন? তা জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন। তাহলে চলুন দেরি না করে পেটে ব্যাথার কারণ এপেন্ডিসাইটিস তা কিভাবে বুঝবেন? তা জেনে নেওয়া যাক।

পেজ সূচিপত্রঃ পেটে ব্যাথার কারণ এপেন্ডিসাইটিস তা কিভাবে বুঝবেন

পেটে ব্যাথার কারণ এপেন্ডিসাইটিস তা কিভাবে বুঝবেন তা জানুন

আমরা সকল ধরনের পেট ব্যথাকে এপেন্ডিসাইটিস বলতে পারিনা। কারণ পেট ব্যথার আরো অনেকগুলো কারণ রয়েছে। শুধু যে এপেন্ডিসাইটিস এর জন্য পেট ব্যথা করে এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। কিন্তু এপেন্ডিসাইটিস পেট ব্যথার বেশ কিছু উপসর্গ রয়েছে। তাই আপনাকে পেটে ব্যাথার কারণ এপেন্ডিসাইটিস তা কিভাবে বুঝবেন? সে সম্পর্কে জানতে হবে।

আরো পড়ুনঃ বাচ্চা হওয়ার কত দিন পর স্ত্রী সহবাস করা যায়?

অ্যাপেন্ডিক্স খাদ্য বা ময়লার ঢুকে যায় তাহলে সেখানে রক্ত পুষ্টি অভাব দেখা দেয়। যার ফলে সেখানে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু আক্রমণ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। যার ফলে এপেন্ডিক্স এ ব্যথা হতে শুরু করে। এই ব্যথা ধীরে ধীরে তলপেটের ডান দিকে চলে আসে এবং একসময় এপেন্ডিসাইটিস রোগ হয়ে যায়। সাধারণত পেট ব্যথার অন্যতম কারণ হতে পারে অ্যাপেন্ডিক্স ফুলে যাওয়া।

  • তলপেট ব্যথা
  • নাভীর চারপাশে ব্যথা
  • বমি বমি ভাব
  • অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে যাওয়া
  • কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা ডায়রিয়া
  • ক্ষুধামন্দা
  • জ্বর হওয়া

১। তলপেট ব্যথাঃ প্রচন্ড পরিমাণে তলপেটে ব্যথা হওয়া। সাধারণত অ্যাপেন্ডিক্স হয়েছে এটা বুঝার অন্যতম একটি উপায় হল তলপেট প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা করা।

২। নাভীর চারপাশে ব্যথাঃ প্রথমে নাভির চারপাশে ব্যথা হয় এরপরে সেই ব্যথা তলপেটের ডান দিকে চলে যাওয়া। সাধারণত নাভির চারপাশ থেকে যদি ব্যথা তলপেটে দিকে নেমে যায় তাহলে বুঝতে হবে এটি এপেন্ডিসাইটিস এর ব্যথা।

৩। বমি বমি ভাবঃ এপেন্ডিসাইটিস এর অন্যতম একটি প্রধান উপসর্গ বমি বমি ভাব। অনেক সময় বমি হওয়া। যদি আপনার তলপেট ব্যথাসহ বমি বমি হয় তাহলে বুঝতে হবে এটি এপেন্ডিসাইটিস এর ব্যথা।

৪। অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে যাওয়াঃ যদি অ্যাপেন্ডিক্স কোন কারনে ফেটে যায় তাহলে সম্পূর্ণ পেট জুড়ে প্রচণ্ড পরিমাণে ব্যথা অনুভব করা।

৫। কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ডায়রিয়াঃ এপেন্ডিসাইটিস রোগের আরও একটি প্রধান কারণ হলো কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া হওয়া।

৬। ক্ষুধামন্দাঃ বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে ক্ষুধা মন্দা দেখা দেওয়া। এপেন্ডিসাইটিস বোঝার অন্যতম একটি প্রধান উপসর্গ বলা যায় এটিকে।

৭। জ্বর হওয়াঃ অনেক সময় এপেন্ডিসাইটিস হলে জ্বর থাকতে পারে কিন্তু শরীরের তাপমাত্রা বেশি হয় না।

এপেন্ডিসাইটিস ব্যাথা কেন হয়

পূর্বের আলোচনায় আমরা পেটে ব্যাথার কারণ এপেন্ডিসাইটিস তা কিভাবে বুঝবেন? সে সম্পর্কে জানিয়েছি। অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলো অ্যাপেন্ডিক্সের সংক্রমণ। অ্যাপেন্ডিক্সের নিঃসরণ যে ছিদ্র দিয়ে খাদ্যনালিতে প্রবেশ করে, কোনো কারণে সেটি বন্ধ হয়ে গেলে এই সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। শক্ত পায়খানা বা অন্য কিছু মুখটি বন্ধ করে দিলে এর নিঃসরণগুলো ভেতরে জমা হতে থাকে।

যেকোনো অসুখ হওয়ার আগে অবশ্যই তার কারণ সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। আমরা যদি রোগের কারণ জেনে নিতে পারি তাহলে সহজেই সেখান থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় গুলো খুঁজে পাবো। এপেন্ডিসাইটিস ব্যাথা কেন হয়? এর কারণ না জানা থাকলে অবশ্যই জেনে নিন।

এপেন্ডিসাইটিস রোগের একমাত্র প্রধান কারণ হলো অ্যাপেন্ডিক্স থলির বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ। সাধারণত মলের ভর, শরীরে কোন বহিরাগত বস্তুর উপস্থিতি, পোকা রসিকা কণার বৃদ্ধি সংক্রমণ, আঘাত এবং টিউমারের কারণে অ্যাপেন্ডিক্স বাধার সৃষ্টি হতে পারে যার ফলে এপেন্ডিসাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং হয়ে থাকে।

কোনও কারণে অ্যাপেন্ডিক্সে খাদ্যকণা বা ময়লা ঢুকে গেলে সেখানে রক্ত আর পুষ্টির অভাব দেখা দেয়। শুধু তাই নয় সেখানে নানা রকম জীবাণুর আক্রমণে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। ফলে অ্যাপেনডিক্সে ব্যথা হতে শুরু করে। আশা করি এপেন্ডিসাইটিস ব্যাথা কেন হয়? এর কারণ সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা পেয়েছেন।

এপেন্ডিসাইটিস বোঝার লক্ষণ সমূহ

এপেন্ডিসাইটিস বোঝার লক্ষণ সমূহ দেখে এবং বুঝে এই রোগ নির্ণয় করতে হবে। যেহেতু এটি একটি জটিল রোগ সহতো খুব সহজেই এই রোগ ধরা পড়ে না। কিন্তু এ রোগের বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে যেই লক্ষণগুলো যদি আপনার শরীরে প্রকাশ পায় তাহলে অবশ্যই বুঝতে হবে আপনার এই রোগ হয়েছে। এপেন্ডিসাইটিস বোঝার লক্ষণ সমূহ জেনে নিন।

আরো পড়ুনঃ কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয়?

১। অ্যাপেন্ডিক্স এর সমস্যা শুরু হয় নাভির চারপাশের ব্যথার মধ্য দিয়ে কিন্তু এ ব্যথা ধীরে ধীরে নাভির চারপাশ থেকে তলপেটের ডান পাশে ছড়িয়ে পড়ে এবং সেখানে স্থায়ী হয়ে যায়।

২। অনেক সময় দেখা যায় আমাদের তলপেট ফুলে ওঠে। সাধারণত অ্যাপেন্ডিক্স এর কারনে আমাদের তলপেট ফুলে থাকে।

৩। তলপেটে শুরুর দিকে ব্যথা কম থাকে। কিন্তু ধীরে ধীরে এই ব্যথা আরো বেশি বৃদ্ধি পায়। যদি এমনটা প্রকাশ পায় তাহলে অবশ্যই বুঝতে হবে এটি এপেন্ডিসাইটিস রোগের এর লক্ষণ।

৪। অনেক সময় ব্যথার কারণে শরীরের জ্বর চলে আসতে পারে। জ্বর থাকার পরেও শরীর এর তাপমাত্রা স্বাভাবিক অর্থাৎ তাপমাত্রা অনেক কম থাকে।

৫। এপেন্ডিসাইটিস হলে হজমে বিভিন্ন রকমের সমস্যা হওয়ার কারণে খেতে ইচ্ছা করে না। সাধারণত এটি এপেন্ডিসাইটিস রোগের লক্ষণ।

৬। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য আগে থেকেই রয়েছে সাধারণত তাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাটি আরো বেশি বৃদ্ধি পেতে পারে।

৭। অনেক সময় কোন কোন রোগের ক্ষেত্রে ডায়রিয়া হতে পারে আবার কোন কোন রোগের ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়।

এপেন্ডিসাইটিস নির্মূলের আধুনিক চিকিৎসা

বর্তমানে সকল রোগের চিকিৎসা রয়েছে। সঠিক চিকিৎসা পাওয়ার জন্য আমাদেরকে সঠিক চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। চিকিৎসা সম্পর্কে জানার আগে আপনার পেটে ব্যাথার কারণ এপেন্ডিসাইটিস তা কিভাবে বুঝবেন? সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। এখন এপেন্ডিসাইটিস নির্মূলের আধুনিক চিকিৎসা সম্পর্কে জানব।

যদি এই রোগ শেষ পর্যায়ে পৌঁছে যায় তাহলে অবশ্যই এটি চিকিৎসা করার জন্য অপারেশন এর প্রয়োজন। অ্যাপেন্ডিক্স অপারেশন করে কেটে ফেলে দেওয়ার দুটি পদ্ধতি রয়েছে সেগুলো হলোঃ

  • ল্যাপারোস্কোপি বা কি-হোল সার্জারি
  • ওপেন সার্জারি

ল্যাপারোস্কোপি বা কি-হোল সার্জারিঃ অ্যাপেন্ডিক্স এর অপারেশনের জন্য বর্তমানে সাধারণত ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি বেছে নেওয়া হয়৷ কারণ এই পদ্ধতিতে রোগী অপেক্ষাকৃত দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে। ফলে হাসপাতাল থেকে তুলনামূলকভাবে দ্রুত ছুটি পেয়ে বাড়ি যাওয়া যায়।

একটি টিউব বা নল। এর সাহায্যে পেটে গ্যাস ঢুকিয়ে পেট ফোলানো হয়। ফলে সার্জন অ্যাপেন্ডিক্স সহ সবকিছু পরিষ্কারভাবে দেখতে পান। পেটের ভেতরে সহজে কাজ করার জন্য বেশি জায়গা পাওয়া যায়।

একটি ল্যাপারোস্কোপ এটি লাইট ও ক্যামেরাযুক্ত একটি ছোটো টিউব। এর সাহায্যে পেটের ভেতরের ছবি সরাসরি বাইরে রাখা একটি টিভির পর্দায় দেখা যায়। পর্দায় এই ছবি দেখে দেখে সার্জনেরা অপারেশনটি পরিচালনা করতে থাকেন।

ওপেন সার্জারিঃ ওপেন সার্জারির ক্ষেত্রে তলপেটের ডানপাশে (যেখানে অ্যাপেন্ডিক্স অবস্থিত) কেটে অপারেশন করা হয়। অ্যাপেন্ডিক্সটি বের করে আনা হয়৷ এক্ষেত্রে কিছুটা বড় করে শুধু একবারই কাটা হয়, বারবার কাটাছেঁড়া করা হয় না।

পেটের ভেতরে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়লে কখনো কখনো পেটের একপাশে কাটার পরিবর্তে মাঝ বরাবর লম্বালম্বিভাবে কেটে অপারেশন করার প্রয়োজন হয়। সাধারণত এই পদ্ধতিকে ল্যাপারোটোমি বলা হয়।

পেটে ব্যাথার কারণ এপেন্ডিসাইটিস তা কিভাবে বুঝবেনঃ শেষ কথা

প্রিয় পাঠকগণ আপনি পেটে ব্যাথার কারণ এপেন্ডিসাইটিস তা কিভাবে বুঝবেন? এপেন্ডিসাইটিস নির্মূলের আধুনিক চিকিৎসা, এপেন্ডিসাইটিস বোঝার লক্ষণ সমূহ, এপেন্ডিসাইটিস ব্যাথা কেন হয়? এ বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা রক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

আরো পড়ুনঃ কোন আইডি দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলা তা জানার উপায়

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমাদের ওয়েবসাইটের নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়।১৬৮৩০


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url